Skip to Content

জাতি কী? জাতি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। What Is Cast.Discuss the characteristics of caste system.

17 জুলাই, 2025 by
Babi Gupta


জাতি ব্যবস্থা কী

জাতি ব্যবস্থা হল ভারতীয় সমাজের একটি প্রাচীন এবং গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রথা, যা মানুষকে তার জন্মগত শ্রেণিতে শ্রেণীবদ্ধ করে।

এই ব্যবস্থায় একজন ব্যক্তির পেশা, সামাজিক মর্যাদা ও বিবাহের সুযোগ সবকিছু তার জাতিভিত্তিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে।

সাধারণত একজন ব্যক্তি যে জাতিতে জন্মগ্রহণ করে, সারা জীবন সেই জাতিতেই অবস্থান করে। এভাবে জাতি ব্যবস্থা ভারতীয় সমাজে একটি দৃঢ় সামাজিক নিয়ম হিসেবে গড়ে উঠেছে। 


<জাতির বৈশিষ্ট্যে 


১. জন্মসূত্রে নির্ধারিত:

জাতি ব্যবস্থা এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে ব্যক্তির জন্মের সাথে সাথেই তার জাত নির্ধারিত হয়। যে শ্রেণিতে জন্মায়, সেটাই তার জাত হয়ে যায় এবং তা পরিবর্তনযোগ্য নয়। এটি আজীবন স্থায়ী ও বংশানুক্রমিক।

২. অন্তর্বিবাহের প্রথা:

সাধারণত একজন ব্যক্তি নিজ জাত বা শ্রেণির মধ্যে বিবাহ করতে পারে। এক জাতির সঙ্গে অন্য জাতির বিবাহ সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।

৩. সামাজিক সচলতার অভাব:

নিম্ন জাতের ব্যক্তি ধনী বা শিক্ষিত হলেও তাকে উচ্চ জাতের মর্যাদা দেওয়া হতো না। তাই সামাজিক উত্থান সম্ভব নয়।

৪. ক্রমাচার্য ভিত্তিক বিভাজন:

ভারতের জাত ব্যবস্থা অনুযায়ী ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র — এই চারটি মূল শ্রেণিতে সমাজ বিভক্ত ছিল।

৫. নিজস্ব রীতি ও প্রথা:

প্রতিটি জাতির নিজস্ব ধর্মীয় আচার, সামাজিক অনুষ্ঠান ও নিয়ম-কানুন ছিল।

৬. খাদ্যাভ্যাসে পার্থক্য:

ব্রাহ্মণরা নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণ করত এবং কার কাছ থেকে খাবার গ্রহণযোগ্য তা নির্ধারিত ছিল।

৭. বংশানুক্রমিক পেশা:

প্রত্যেক জাতির নির্দিষ্ট পেশা ছিল। ব্রাহ্মণরা পুরোহিত, ক্ষত্রিয়রা যোদ্ধা, বৈশ্যরা ব্যবসায়ী, শূদ্ররা কৃষি কাজ করত।

৮. জাতি ভিত্তিক পদবি:

পদবি থেকেই অনেক সময় জাত বোঝা যেত। যেমন: চক্রবর্তী (ব্রাহ্মণ), কর্মকার (কারিগর)।

৯. জাতি ভিত্তিক শিক্ষা ও সুযোগ:

উচ্চ জাতের মানুষ সম্মান ও সুযোগ পেত, নিম্ন জাতের মানুষ ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল।

১০. জাতি পঞ্চায়েতের ভূমিকা:

প্রত্যেক জাতির বিচারব্যবস্থা ছিল। নিয়ম ভাঙলে সমাজচ্যুতি বা শাস্তি দেওয়া হতো।

১১. আত্মগৃহীত মর্যাদা:

জাতের মর্যাদা জন্মসূত্রে নির্ধারিত হতো; অর্জনের মাধ্যমে তা পরিবর্তন সম্ভব ছিল না।

১২. সঙ্গভোজন নিষেধ:

উচ্চ জাতের মানুষ নিম্ন জাতের সঙ্গে একত্রে আহার করত না। এটি সামাজিক বৈষম্যের চিহ্ন।

১৩. ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার হীনতা:

নিম্ন জাতের মানুষ মন্দিরে ঢুকতে বা স্কুলে ভর্তি হতে পারত না।

১৪. সামাজিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা:

জাত ব্যবস্থা সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষা, নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ব বণ্টনের কাজে ব্যবহৃত হতো।

🔚 উপসংহার:

ভারতের জাত ব্যবস্থা একসময় শক্তিশালী ছিল। বর্তমানে যদিও এর প্রভাব কমেছে, তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনও তা বিদ্যমান।